আতঙ্কে প্রকৃত ভূমির মালিকরা  কলাপাড়ায় ৩২ বছরের দখলীয় জমিতে দখলদারদের এ কি তান্ডব !

আতঙ্কে প্রকৃত ভূমির মালিকরা  কলাপাড়ায় ৩২ বছরের দখলীয় জমিতে দখলদারদের এ কি তান্ডব !
মোয়াজ্জেম হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
প্রায় তিন যুগের আবাদকৃত ১০ একর জমিতে হঠাৎ করে দখল তান্ডবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সৈয়দ আব্দুল গণি তার ভাইসহ ওয়ারিশরা। মনষাতলীর ১৩৮ নম্বর খতিয়ানের এ জমিতে নামেমাত্র খড়ের ঘর তুলে জমির শ্রেণি পরিবর্তনের চেষ্টা করে যাচ্ছে দখলদার সুলতান মৃধা গং। এমনকি উপায় না পেয়ে আদালতে দ্বারস্থ হয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছেনা এসব মানুষের। আদালতের নিষেধাজ্ঞাও মানছে না দখলদার চক্র। সরকার দলীয় এক ক্যাডারের প্রত্যক্ষ মদদে এসব করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। বর্গাচাষী আবুল কালাম জানান, একটি ভুয়া দলিলের মাধ্যমে হঠাৎ করে ৩২ বছরের দখলীয় জমিতে হানা দিচ্ছে ওই চক্র। এনিয়ে এলাকায় অন্যান্য ভূমি মালিকদের মধ্যেও এক ধরনের আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার মনষাতলী মৌজার ১৩৮ নং খতিয়ান থেকে সৈয়দ আবদুল গণি, সৈয়দ আবদুল আজিজ, সৈয়দ আবদুল মোতালেব, আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, শহিদ হাওলাদার, দেলোয়ার হাওলাদার, নুর ভানু বেগম, মইয়র বেগম ও শাহিদা বেগম আটটি ভিন্ন ভিন্ন দলিলমূলে মোট ১০ একর নয় শতাংশ ভ‚মি দীর্ঘ ৩২ বছর ভোগদখলকার মালিক রয়েছেন। কিন্তু একটি চক্র ১৩৮ নং খতিয়ানের একটি দাগ অন্তভর্‚ক্ত করে ভিন্ন খতিয়ান দেখিয়ে দলিল নিয়ে মালিকানা দাবি করে দখল তান্ডবে নেমেছে। যেন সব গায়ের জোর। কোন সালিম বৈঠকও মানছেনা এ চক্র।
সৈয়দ আবদুল গনি ওই জমির মালিকানা স্বত্ত¡ ও জাল দলিল বাতিল চেয়ে পটুয়াখালীর যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে দেওয়ানী মোকদ্দমা ১৪৫/১৮ নং মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত প্রতিপক্ষ সুলতান মৃধা, আজিজ মৃধা, শাহজাহান মৃধা, পান্না ফরাজী ও রিপন মৃধাদের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। প্রতিপক্ষরা আদালতের আদেশ নোটিশ পেয়ে তা আমলে না নিয়ে দখল তান্ডবে নামে। আব্দুল গণি গং জানান, মনষাতলী মৌজার এস এ ১৩৮ নং খতিয়ান ও দলিলের থাম বইয়ের নম্বর ঠিক রেখে ৫৭ বছর বয়সী দলিল গ্রহীতা সুলতান মৃধা তার বয়স ৭৫ বছর দেখিয়ে দলিল সৃষ্টি করে। রেজিষ্ট্রী অফিসের বালামে নেই, ভ‚মি অফিসের রেকর্ডপত্রে তাদের কোন হদিস নাই। তারপরও থেমে নেই জমি দখল কৌশল। জানা গেছে, ওই জমির এসএ খতিয়ানের মূল মালিক রাজেন্দ্র লাল ও মনোরমা রায় এর ১৬ আনা অংশ কর্তন করে ১৯৭৩-৭৪ সনের ৩৫৮ খে (অংশ-২) মিউটেশন কেস অনুসারে শ্রী নীল কৃষ্ণ, আমজেদ আলী, ফজর আলী, জয়নাল আবেদীনদের নামে রেকর্ড হয়। রেকর্ডীয় মালিক থেকে সাব কবলা দলিল মূলে রেকর্ড পর্চা হাল দাখিলা করে প্রকৃত জমির মালিক প্রাপ্য হন সৈয়দ আবদুল গনিগং। কিন্তু সুলতান মৃধা গং জিহাল কৃষ্ণকে দাতা দেখিয়ে ১৯৬৩ সনের বালাম বিহীন ভুয়া দলিল করে ওই জমির মালিক দাবি করেন। যার কোন অস্তিত্ব নেই বলে সৈয়দ গণি গংদের মন্তব্য।
স্থানীয় আবুল হাসেম মৃধা জানান, সুলতান মৃধা তার চেয়ে তিন বছরের ছোট। বর্তমানে তার বয়স ৫৭ বছর। দলিলে কিভাবে ৭৫ বছর হয়? এমন প্রশ্ন অনেকেরই। দীর্ঘ বছর এ জমির মালিক সৈয়দ আবদুল গনি গংদের ভোগ দখল করতে দেখছেন। তিনিও জানান, সুলতান মৃধাদের প্রকৃত দলিল ১৯৬৩ সনের হয়ে থাকলে এতদিন কেন ওই জমির মালিক দাবি করলেন না? সুলতান মৃধাদের দলিল বা মালিকানা সম্পর্কে জানেন না এলাকাবাসী অনেকেই।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment